ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ—ধর্মের ভারে নুয়ে পড়া এক জাতি

বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে কথা বলা সহজ নয়। ধর্মের বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে যে, কেউ কেবল প্রশ্ন তুললেও তার দেশপ্রেম, বিশ্বাস, এমনকি জীবন নিয়েও সন্দেহ জাগে। অথচ রাষ্ট্র বা সমাজ, যখন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গিয়ে একটি ধর্মের প্রাধান্যকে তার কাঠামোর কেন্দ্রে বসায়, তখন অন্যদের জন্য তৈরি হয় নিঃশ্বাস ফেলার সংকট।

এই দেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। অথচ সংবিধানে বলা হয়—সব ধর্মের সমান অধিকার থাকবে। কীভাবে সম্ভব? একদিকে ধর্মনিরপেক্ষতার দাবি, অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া—এই দ্বিচারিতা কেবল কাগজে কলমে সৌন্দর্য দেখালেও বাস্তবে তা বঞ্চনার জন্ম দেয়।

সবচেয়ে দুঃখজনক হলো—জাতিসত্তার প্রশ্নে আমাদের অবস্থান। “বাঙালি” পরিচয়কে রাষ্ট্র যখন একমাত্র বৈধ জাতিসত্তা হিসেবে নির্ধারণ করে, তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারোসহ অগণিত জাতিগোষ্ঠী হয়ে পড়ে ‘অপর’—এক অদৃশ্য প্রান্তে ঠেলে দেওয়া মানুষ। তাদের পরিচয় “উপজাতি”, “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী”, কিন্তু কখনোই সমান মর্যাদার নাগরিক নয়।

এই ‘অপর’ হওয়ার শাস্তি খুবই নির্দয়। রমেল চাকমা কি ভুল করেছিল? তার দোষ কী ছিল? কেবল এই যে সে বাঙালি নয়? কিংবা মুসলমানও নয়? ধর্ম ও জাতির এই দ্বৈত অপরাধ তাকে রাষ্ট্র ও সংখ্যাগরিষ্ঠের চোখে এক ‘অপরাধী’ বানিয়েছে।

যখন একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মন্দির পোড়ে, তাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে যায়, তখন রাষ্ট্র কেবল আশ্বাস দেয়। দেরিতে পুলিশ আসে, রাজনৈতিক নেতারা ছবি তোলে, টেলিভিশনে ফুটেজ চলে—তারপর আবার সব আগের মতোই। বিচার হয় না, শাস্তি হয় না, দোষীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। কিন্তু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এসব সামান্য মানবিকতাও প্রয়োগ হয় না। বরং তারা একে একে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রের নীরব নিষ্ঠুরতায়।

এই দেশ ধীরে ধীরে এমন একটি দিকে এগোচ্ছে, যেখানে যারা মাথায় টুপি পরে, গলায় দাড়ি রাখে—তাদের জন্য সব দরজা খোলা। বাকিরা, যেন একেকটি ভুলে যাওয়া ইতিহাস। এ যেন এক ধর্মীয় জাতিগত শ্রেণিবিন্যাসের সমাজ, যেখানে কারো মর্যাদা তার জন্মপরিচয় আর ধর্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।

এই পরিস্থিতিতে কথা না বলা মানে অন্যায়ের অংশীদার হওয়া। আমাদের প্রয়োজন সত্যকে স্পষ্ট করে বলা, হোক তা যতই অস্বস্তিকর। বাংলাদেশ কোনো একক জাতির দেশ নয়, কোনো একক ধর্মেরও নয়। এই ভূমি বহু মানুষের, বহু জাতির, বহু বিশ্বাসের।

যদি আমরা সত্যিকারের বাংলাদেশ চাই—যে বাংলাদেশ আমাদের পূর্বসূরিরা ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন—তাহলে আমাদের এ বৈষম্য, কুসংস্কার এবং ধর্মীয় আধিপত্যের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। না হলে, এই দেশ একদিন সত্যি শেষ হয়ে যাবে—ধর্মের, ঘৃণার, এবং নীরবতার ভারে।

16 Responses

  1. এই ব্লগার নাস্তিক এর বাচ্চার সাবধান হয়ে যা।পরিস্থিতি কিন্তু খারাপ হয়ে যা।

  2. আপনার লেখায় অনেক শক্তি আছে।

  3. এমন সত্য কথা বলতে সাহস লাগে।

  4. লেখায় কোনো সৌন্দর্য নেই।

  5. নাস্তিক ব্লগাররা হিন্দুদের মতো মালাউন। এদেরকে আগুন দিয়ে জালিয়ে দিলে কোন গুণাহ হবে না।

  6. সব কিছুর মধ্যে তো আপনারাই ধর্মকে টেনে আনেন,।

  7. হাজী মোহাম্মাদ হাফিযুল রহমান says:

    আপনি নিজে কী করেন, সেটা আগে বলুন।

  8. সবসময় শুধু অভিযোগ আর আক্রোশ।

  9. নাস্তিকরা সবসময় ইসলাম বিরোদী কাজ করে বেড়ায়।

  10. আপনি কি কারো প্রতি হিংসা পোষণ করেন?

  11. নাস্তিক কুলাংগার বাচ্চাদের আমি ঘৃণা করি

  12. আপনি যেমন ভাবেন, সবাই যদি তেমন ভাবত!

  13. এমন লেখা মানুষকে বিভ্রান্ত করে।

  14. আপনি সমাজের আয়না তুলে ধরেছেন।

  15. নতুন কিছু শেখার সুযোগ দিলেন।

  16. আপনি কি শুধু রাগ নিয়েই লিখেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *