ধর্মপ্রচার একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ—এটি কেবল একটি মতবাদ ছড়িয়ে দেওয়া নয়, বরং সত্য, সততা ও যুক্তির মাধ্যমে মানুষের হৃদয় ছোঁয়ার একটি মাধ্যম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান সময়ে কিছু মুসলিম ধর্মপ্রচারক এই গুরুদায়িত্বকে নিজেদের ব্যক্তিগত প্রচার ও শ্রোতাদের প্রভাবিত করার হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছেন।
এদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো—তথ্য যাচাই না করেই দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে কথা বলা। অনেক সময় তারা এমন সব তথ্য তুলে ধরেন যেগুলোর উৎসই সন্দেহজনক, কিংবা বিকৃত ব্যাখ্যার মাধ্যমে শ্রোতাদের বিভ্রান্ত করা হয়। এই ধর্মপ্রচারকগণ জানেন, তাদের শ্রোতাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত নন, আর কেউ কেউ ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করাকে পাপ মনে করে—ফলে এসব ভুল তথ্যে প্রশ্ন তোলা তো দূরের কথা, অনুগত শ্রোতারা অন্ধভাবে তা বিশ্বাস করে বসে।
ধর্মীয় আবেগের ওপর ভর করে এই প্রচারকরা নিজেদের একপ্রকার ‘অভিজ্ঞানী’ রূপে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারা এমনভাবে কথা বলেন যেন একমাত্র তারাই সত্য জানেন, আর যারা ভিন্নমত পোষণ করে তারা বিভ্রান্ত বা ‘শত্রু’। এই মনোভাব সমাজে বিভেদ তৈরি করে, প্রশ্নবিমুখতা তৈরি করে এবং যুক্তির বদলে আবেগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবার সংস্কৃতি জন্ম দেয়।
কিন্তু সময় বদলেছে। এখন আর কেউ শুধুমাত্র মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা কথাকেই চূড়ান্ত সত্য বলে মেনে নিতে বাধ্য নন। তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতার ফলে যেকোনো দাবির সত্যতা যাচাই করা আগের চেয়ে অনেক সহজ। একজন ধর্মপ্রচারক যখন বাইবেল, গীতা বা বিজ্ঞানের নামে কিছু বলেন, তখন মানুষ এখন সেটা গুগল করে দেখতে পারেন, তুলনা করতে পারেন আসল উৎসের সঙ্গে। ফলে, যেসব কথাবার্তা আগে শ্রোতাদের মুগ্ধ করত, এখন তা অনেকের কাছেই অযৌক্তিক এবং হাস্যকর মনে হয়।
এই অবস্থা সমাজে গভীর প্রভাব ফেলছে। অনেক তরুণ-তরুণী যারা ধর্ম নিয়ে আগ্রহী ছিল, তারা এখন বিভ্রান্ত। যারা মনে করেছিল ধর্ম মানেই জ্ঞান, সৌন্দর্য আর মানবতা—তারা যখন এসব অসততা দেখতে পায়, তখন তারা সন্দেহে পড়ে। কেউ কেউ ধর্ম থেকে সরে আসে, কেউ আবার নীরব সংশয়ে ভোগে। অথচ এটি প্রতিরোধ করা যেত, যদি ধর্মপ্রচারকরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতেন—সততা, গবেষণা ও মানবিকতা বজায় রেখে।
শুধু ইসলাম নয়, পৃথিবীর সব ধর্মই এমন অসততা ও অপপ্রচারের শিকার হয়েছে কোনো না কোনো সময়ে। কিন্তু পার্থক্য হলো—যেখানে সমাজে সমালোচনার জায়গা থাকে, সেখানে সত্যের পথেই এগোনো যায়। কিন্তু যেখানে ধর্মকে প্রশ্নবর্জিত করে তোলা হয়, সেখানে কুসংস্কার, ভুল তথ্য আর অন্ধ আনুগত্য ছড়িয়ে পড়ে।
তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন—সচেতনতা, আলোচনা, এবং যুক্তিনির্ভর ধর্মবোধ। ধর্ম যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি যুক্তির আলোতেই টিকে থাকবে। কোনো মিথ্যা বা ভুয়া দাবির প্রয়োজন নেই তাকে সুরক্ষিত রাখতে।
আর ধর্মপ্রচারক যদি প্রকৃতপক্ষে সমাজের হিতচিন্তক হতে চান, তাহলে তাদের প্রথম দায়িত্ব হওয়া উচিত—সততা রক্ষা করা, নিজের বলা প্রতিটি তথ্য যাচাই করা এবং শ্রোতাদেরকে ভাবতে শেখানো। অন্ধ বিশ্বাস নয়, যুক্তি ও মানবতার মাধ্যমেই একজন প্রকৃত ধর্মপ্রচারক শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারেন।
22 Responses
ধর্ম কখনও অন্যায়কে সমর্থন করে না। কোনো ধর্মই করে না। আপনারা সবসময় যে কোনো অন্যায়ের দোষ ধর্মের ঘাড়ে চাপান। এটা ঠিক নয়।
লন্ডনে থাইকা বাল ফালাও? বালের লেখক হইসো? ওইখানে তো বাসন মাজো, দেশে আইসা কিছু কইরা দেখাও
আপনার কলমের জাদু আছে।
তুই সব কিছুতে মুসলমানদের দোষ ধরার তালে থাকস।মানুষরে উস্কানি দিতে ওস্তাদ তোরা। এইজন্যই কোপানি খাস।
একবার দেশে আয়। আমরা তৌহিদি জনতা শফি হুজুরের নেতৃত্বে তোদের দেখে নেব
শুয়োরের বাচ্চা, একবার কাছে পাই তোকে
এমন লেখাই যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।
এই শোন নাস্তিকরা তোদেরকে কেউ বিশ্বাস করে না।তোদের এই লেখাকে কেউ বিশ্বাস করে না।
আপনি মন থেকে লিখেন, সেটা স্পষ্ট।
লেখার মান উন্নয়ন করুন আগে।
আপনি কি নেতিবাচকতা ছড়ানোই পছন্দ করেন?
এই ব্লগারের বাচ্চা তুই কে তর পরিচয় কি।তোকে আমি খুন করবো।
অসাধারণ বক্তব্য।
নাস্তিক মুক্তমনা ব্লগার দের বাংলাদেশ থেকে এদের বিতাড়িত করা হউক।
আর কিছু জানেন না, শুধু কটাক্ষ?
নাস্তিক ব্লগারদের উসকানীমূলক ব্যাক্তব্যে বন্ধ করতে হবে।না হয় এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।
সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন।
শুধু ব্লগারদের খারাপ চোখে দেখলে হবে না।বাংলাদেশে ইমাম রাই কিছু কিছু খারাপ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে।আর সেই কাজ জঙ্গী তৈরীর কাজের সাথে ইমামরা জড়িত থাকে।
আপনার লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হই।
তোদের মতো নাস্তিক ব্লগার এর কারনে আজ দেশে কেউ শান্তিতে নেই।
লেখায় যুক্তি ও আবেগের সুন্দর মিশ্রণ।
আপনার চিন্তার প্রশংসা না করে পারছি না।